Logo

আন্তর্জাতিক    >>   কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নিউরাল নেটওয়ার্কের পথিকৃৎ: পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নিউরাল নেটওয়ার্কের পথিকৃৎ: পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নিউরাল নেটওয়ার্কের পথিকৃৎ: পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন জন হোপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন

সুইডেনের স্টকহোমে, ২০২৪ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের দিকপাল জন হপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন। তারা এমন এক মৌলিক গবেষণার জন্য এই সম্মান অর্জন করেছেন, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত নিউরাল নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করেছে এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তিকে সক্ষম করে তুলেছে।

রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেসের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এই পুরস্কারের অধীনে তারা একটি নোবেল মেডেল, সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা) পুরস্কার হিসেবে পাবেন। যদি পুরস্কার বিজয়ীর সংখ্যা একাধিক হয়, তবে অর্থের পরিমাণ সমানভাবে ভাগ করা হবে।

জন হপফিল্ড এবং জিওফ্রে হিন্টনের আবিষ্কার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। নিউরাল নেটওয়ার্ক, যা মানব মস্তিষ্কের কার্যপদ্ধতির অনুকরণ করে, মেশিন লার্নিংয়ের উন্নয়নে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আজ দ্রুতগতিতে শিখতে এবং সমস্যার সমাধান করতে পারছে, যা বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাচ্ছে।

জন হপফিল্ড ১৯৩৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিউ ইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে পিএইচডি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। হপফিল্ড নিউরাল নেটওয়ার্কের উপর তাঁর যুগান্তকারী কাজের জন্য সুপরিচিত। তাঁর "হপফিল্ড নেটওয়ার্ক" হলো এক ধরনের পুনরাবৃত্তিমূলক নিউরাল নেটওয়ার্ক, যা তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এই আবিষ্কারটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মৌলিক কাঠামো গঠনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

জিওফ্রে হিন্টন, যিনি ১৯৪৭ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন, ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবার্গ থেকে ১৯৭৮ সালে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। হিন্টনকে "ডিপ লার্নিংয়ের জনক" বলা হয়। তিনি গভীর শিক্ষণের (ডিপ লার্নিং) উপর যে অভূতপূর্ব গবেষণা করেছেন, তা মেশিন লার্নিংয়ের গতিপথ পরিবর্তন করে দিয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে তৈরি করা গভীর নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিত্র ও ভাষা চিনতে, বিশ্লেষণ করতে এবং বাস্তব জীবনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম।

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে নোবেল সপ্তাহের সূচনা হলো। গত বছর পদার্থবিদ্যায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন পিয়ের অগস্টিনি, ফেরেঙ্ক ক্রাউৎজ এবং অ্যানে এলহুইলার। তাঁদের গবেষণার বিষয় ছিল ইলেকট্রন গতিবিদ্যা। এবছরও পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন প্রক্রিয়া এবং সংক্ষিপ্ত তালিকা অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে সম্পন্ন করা হয়েছে।

নোবেল পুরস্কার ঘোষণা চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। এর মধ্যে ৮ অক্টোবর পদার্থবিদ্যার, ৯ অক্টোবর রসায়নের, ১০ অক্টোবর সাহিত্যের, এবং ১১ অক্টোবর শান্তির নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। ১৪ অক্টোবর অর্থনীতিতে বিজয়ীর নাম ঘোষণার মাধ্যমে এই বছর নোবেল পুরস্কার অনুষ্ঠান শেষ হবে।

জন হপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টনের এই নোবেল পুরস্কার প্রযুক্তির ভবিষ্যত উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। তাদের আবিষ্কার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিংয়ের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে এবং পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন শিল্পে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে।





P.S 220 Winter concert

P.S 220 Winter concert